- Published on
কেন বিয়ে মাস্টারবেশনের সম্পূর্ণ সমাধান না
এই পোস্টটিতে মূলত কেন কলুষমুক্ত হওয়ার জন্য বিয়ে সম্পূর্ণ সমাধান না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। **কিন্তু **কলুষমুক্ত হতে এটি একটি বড় ও শক্তিশালী প্রভাবক হতে পারে। আমি সাধারণত পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে লিখে থাকি, তাই বেশির ভাগ সময় “আপনার স্ত্রী-” টাইপের ভাষা ব্যবহার করি, তবে আপনি নারী হলে স্বচ্ছন্দে শব্দটি “স্বামী”-র দ্বারা পরিবর্তন করে নিয়ে লেখাটি পড়তে পারেন।
- বিয়ে বিষয়টাকে কিভাবে চিন্তা করেন, তার উপর ভিত্তি করে দু’জনই কলুষমুক্ত থাকতে অনেক বড় ভুমিকা রাখতে পারেন। যেমনঃ আপনি কি বিয়েকে শুধুমাত্র যৌন সম্পর্কের মাধ্যম হিসাবে দেখেন?
- আপনি যদি মাস্টারবেশন ও পর্নে আসক্ত হন, ৯৯% সম্ভাবনা বিয়ের পাঁচ বছর পরেও আপনি এসবে আসক্ত থাকবেন।
- কেন? কারণ, বিয়ের যৌন তৃপ্তি আর পর্ন ও মাস্টারবেশনের যৌন তৃপ্তি আলাদা।
- অন্তরঙ্গতার পুরো ব্যাপারটিই দু’জন মানুষের অত্যন্ত চমৎকার ভাবে কাছে আসা, যা আসলেই আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার পক্ষ থেকে একটি আশীর্বাদ। ভালবাসা এবং মমতার কারণে আপনার স্ত্রী বা স্বামীকে তৃপ্তি দেওয়া। নিজের চেয়ে নিজের স্ত্রীর তৃপ্তির ব্যাপারে বেশি চিন্তা করা; ত্যাগ নিশ্চিত করা যেন পুরো সময়টুকু তাঁর জন্য আরামদায়ক হয়, যেন তিনি কষ্ট না পান বা তাঁর সাথে বিবেচনাহীন আচরণ না করা হয়, যেন তাঁকে সম্মান দেওয়া হয়।
- মাস্টারবেশন ও পর্নের পুরো ব্যাপারটিই অন্তরঙ্গতার বিপরীতে যায় কারণ এখানে মুখ্য বিষয় হলঃ নেওয়া ও স্বার্থপরতা। নিজে তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে আনন্দ দেওয়া, নতুন কিছুর খোঁজে চলে যাওয়া। এজন্যই পর্ন দেখা ও মাস্টারবেশনের পরে এত শূন্য বোধ হয়। কারণ বিষয়টা হওয়া উচিত ছিল এমন, আপনি একজনের সাথে অভিজ্ঞতাটা ভাগাভাগি করবেন, যে আপনাকে ভালবাসে এবং আপনিও তাকে ভালবাসেন।
- একটি সুস্থ বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য যে মানসিকতা প্রয়োজন, পর্ন ও মাস্টারবেশন তার সম্পূর্ণ বিপরীত জিনিস শেখায় । পর্নোগ্রাফি এমন সব বিষয় দিয়ে ভর্তি যেখানে নারীকে পুরুষের দাসত্বকারী পতিতার স্তরে নামানো হয়। এতে আরো দেখানো হয়- ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব। এখানে অন্তরঙ্গতাকে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সাথে মিলানো হয় যা কি না কখনোই হওয়া উচিত না। স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে অন্তরঙ্গতা হওয়া উচিত পারস্পরিক, স্বার্থহীন এবং ভারসাম্যপূর্ণ। পর্নোগ্রাফিতে অন্তরঙ্গতাকে দেখানো হয় অসভ্য, পাশবিক, স্বার্থপর এবং শরীর-কেন্দ্রিক শয়তানোচিত কর্ম-কাণ্ড হিসাবে। এবং এখান থেকেই ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ব্যাপারটা আসে।
¨ সুতরাং আপনি যখন নিজেই নিজেকে আনন্দ-দানে অভ্যস্ত, আপনি শুধু চাইবেন আপনার স্ত্রী আপনাকে আনন্দ দিক, আপনি তার তৃপ্তির ব্যাপারে চিন্তাও করবেন না। আপনার যৌন জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আপনি পর্ন ও মাস্টারবেশনে ফিরে যাবেন যেখানে সবসময় নিজেকে নিজেই আনন্দ দিয়ে এসেছেন।
- কারণ পর্নের পাশবিক ব্যাপারগুলো আপনার স্ত্রীর জন্য আরামদায়ক হবে না
- কারণ আপনার স্ত্রী পর্নের মত যৌন তুষ্টিতে অফুরান না
- কারণ আপনার স্ত্রীর থাকবে সত্যিকারের মানুষের দেহ। পর্নে দেখানো শরীর এবং বিষয়গুলো প্লাস্টিক সার্জারি এবং কেমিক্যাল এনহ্যান্সমেন্ট দ্বারা অতিরঞ্জিত। পর্নে দেখানো নারীর তুলনায় আপনার স্ত্রীকে সাদামাটা মনে হবে।
- বাস্তবতা হল, আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলা আমাদের শরীরগুলো তৈরী করেছেন, এবং যদি আপনার কাছে পর্নস্টারের কৃত্রিম দেহটি আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার দ্বারা সৃষ্ট (আপনার স্ত্রীর) আসল শরীরের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় মনে হয়, তাহলে আপনি সৌন্দর্যের বদলে নোংরামী বেছে নিয়ে নিজেই নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেন। তার উপর, অনেক চমৎকার নারী আছেন যাদের কোন বাজে মানসিকতা নেই এবং কখনো কোন কসমেটিক সার্জারি বা কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট না নিয়েই শারীরিক ভাবে আপনার স্ত্রীর চেয়ে সুন্দরী। ঠিক যেমন অনেক ভাল এবং অভিজাত অনেক পুরুষ আছেন যারা আপনার চেয়ে শারীরিকভাবে বেশি সুদর্শন।
যাই হোক, আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলার বিবেচনাই সর্বোত্তম- এবং কত ন্যায়পরায়ণ তিনি, শরীরের বা চেহারার সৌন্দর্য দেখে বিচার না করে আমাদের হৃদয়ের সৌন্দর্য দিয়ে বিচার করবেন! তিনি আমাদেরকে আমাদের কর্ম ও হৃদয়ের পরিশুদ্ধতা দিয়ে বিচার করবেন। তাহলে আমাদের কী অধিকার আছে মানুষকে, বিশেষত আমাদের (সম্ভাব্য) স্ত্রীদের তাদের চেহারা দ্বারা বিচার করার, যখন আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলাই আমাদের সবার অবয়ব তৈরী করেছেন। ধার্মিক জ্ঞানের দ্বারা বোঝা যায়, মানুষের চেহারা দেখে তাদের সম্পর্কে ধারণা নেওয়া উচিত না, কারন তারা নিজেরা তা বেছে নেয় নি, আল্লাহ সুবহানাহুতা’আলা বেছে দিয়েছেন।
- আপনি ভুলে যাবেন যে একটা সম্পর্কে শুধু যৌনতা ছাড়াও অনেক কিছু আছে
- যখন আপনার স্ত্রী গর্ভবতী বা বয়স্ক হবেন, আপনি তাকে অবজ্ঞা করবেন, তার সাথে প্রতারণা করবেন পর্নে দেখা (আপনার কাছে) আকর্ষণীয় জিনিসগুলো দ্বারা
- কারণ যখন আপনি বয়স্ক হবেন এবং আপনার বাচ্চা-কাচ্চা থাকবে, জীবন অত্যন্ত ব্যস্ত থাকবে এবং স্ত্রীর সাথে অন্তরঙ্গতার সময় পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে, এবং আপনি পর্নে ফিরে যাবেন কারণ বিয়ের আগে আপনি এটা বাদ দেননি।
v পরিশেষে, মাস্টারবেশন ও পর্ন ত্যাগ করুন বিয়ের আগেই। ব্যাপারটা এমন না যে আপনি বিবাহিত হলে ছাড়তে পারবেন না, কিন্তু যদি অবিবাহিত হয়ে থাকেন এখনো, কাউকে বিয়ে করার আগে নিজেকে কলুষমুক্ত নিশ্চিত করুন। কলুষতায় আসক্ত সঙ্গীর বোঝা কোন স্ত্রীরই প্রাপ্য না।
[লস্ট মডেস্টি অনুবাদ টিম কর্তৃক অনূদিত]
মূল পোস্ট - https://fallenseeker.wordpress.com/2010/03/27/why-marriage-isnt-a-complete-solution-to-masturbation/