- Published on
‘ঝড়ের পরে’
বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম
মোমবাতির হলুদ শিখা শরতের রাতের মৃদু বাতাসে কাঁপছে ক্ষণে ক্ষণে। ঘরের এককোণে আলো আঁধারি ছায়া আর দুঃখের যে মিলনমেলা বসেছে সে সম্পর্কে ঘরের অন্য অধিবাসীর কোনো মাথাব্যাথা নেই। মাথা সচল থাকলে না ব্যাথা করবে। চাঁদু’র নাক সজোরে ডাক ছাড়ছে। ঘুমে বেহুঁশ। চারজার ফ্যানের একটানা ঘর ঘর শব্দ, ছন্দবদ্ধ নাক ডাকার আওয়াজ,আমার খাতা কলমের খসখসানি আর পাশের ঘরের দূরালাপনের প্রেমের ফিসফিসানি ছাড়া গোটা দুনিয়া যেন মরে গেছে। কবরের নিস্তব্ধতা।
একটু আগে সে জঘন্য পাপটা আবার করলাম। ৩৮ দিন পর। গুনে গুনে ৩৮ দিন পর। দিনের শুরুতে বুঝতেই পারিনি যে আজ রাতে এরকম কিছু ঘটতে যাচ্ছে। অবশ্য এটা পুরোপুরি সত্য নয়। কয়েকদিন থেকেই ঘুরে ফিরে পর্ন দেখতে ইচ্ছে করছিল। পর্ণে দেখা দৃশ্যগুলো মাথায় ঘুরছিল। স্মৃতি বড় প্রতারক, বড় নিষ্ঠুর। কতো চেষ্টা করেছি একদময়কার দেখা পর্ণের দৃশ্যগুলোর কথা ভুলে যেতে। কতো সাধনা করেছি। কিন্তু প্রতারক স্মৃতি বারবার তা মনে করিয়ে দিয়েছে। বারেবারে নীল কারাগারের হুলিয়া জারি করেছে। বহু কষ্টে এই ৩৮ টা দিন নিজেকে সামলিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু আজকে হেরে গেলাম।
আবার হেরে গেলাম।
শরীর ভেঙ্গে যায়। মনে তৈরি হয় বিশাল ক্ষত। প্রশ্নের ঝড় বয়ে যায় মনোজগতে- এরকম টুকরো টুকরো মৃত্যুর চেয়ে কী একেবারেই মরণ ভালো ছিলনা? চোখে প্লাবণ নামে। তবে সেই অনূভুতির কাছে এগুলো নেহায়েত তুচ্ছ। শরীর,মন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কষ্টের চেয়েও তীব্র কষ্টটা হলো – আল্লাহর চোখের সামনে জঘন্য কাজটাতে লিপ্ত হওয়া। যখন ঘরের অন্ধকারে,নির্জনে নির্লজ্জ হয়েছিলাম, যখন মেতে উঠেছিলাম উন্মত্ত নীল মত্ততায় তখনো তো আমাকে আল্লাহ দেখেছেন! হায়! কী করে এতো নিকৃষ্ট হলাম? কেন আল্লাহকে লজ্জা করলাম না? . নিজের কষ্টগুলো কাছিমের মতো গুটিয়ে নিয়ে আবার হাসিমুখে নামতে হয় পৃথিবীর পথে । এই খেলা আর কতোকাল চলবে?
রাতে শোবার সময় ভাবলাম আজ একটু দেরি করে ঘুমাই। আগামীকাল তেমনকোন কাজ নেই। ঘরেই বসে থাকতে হবে অলস। ভাতঘুম দিয়ে রাতের ঘুমের অভাব পুষিয়ে নিবনি। মোবাইল গুঁতোতে গুঁতোতে শেষমেশ নিজেকে আবিষ্কার করলাম পর্নসাইটে। তখনো ভেতরটা ঘুমিয়ে পড়েনি। বাঁধা আসলো। দেখিসনা। জলদি বের হয়ে যা!
নিজেকে বোঝালাম, শুধু দেখব, কিন্তু হস্তমৈথুন করবনা। আর এভাবেই শয়তানের পাতা প্রথম ফাঁদে পা দিলাম। তারপর একসময় হস্তমৈথুন করলাম। আসক্তির প্রথম পর্যায়ে সাধারণত এইসময়গুলোতে হতাশা আর আলসেমিপনায় গা ভাসিয়ে দিতাম। ঘন্টার পর ঘন্টা ঝিম ধরে কাটিয়ে দিতাম। কোনকোন সময় দুই তিন দিন। আজ চটজলদি গোসল সেরে ফেললাম। বাকী রাতটা জেগেই কাটাবো। ফজর,তাহাজ্জুদ কিছুই বাদ দেওয়া যাবেনা আজ। পাপ করেছি এবার কিছু পূন্য করা যাক। পাপে পূণ্যে কাটাকাটি।
'...ভ্যাঁপসা গরম। কারেন্ট কখন আসবে বিন্দুমাত্র কোন ধারণা নেই। গম্ভীর ডাক ছেড়ে একটা প্যাঁচা এক গাছ থেকে অন্য গাছের উদ্দেশ্যে উড়াল দিল । মোমবাতি দ্রুত গলে যাচ্ছে। জমাটবাঁধা দুঃখগুলোও যদি এভাবে দ্রুত গলে যেত। অশ্রু হয়ে ঝরে পড়তো আমার দু'গাল বেয়ে। কাঁদতে পারিনা আমি আর। অথচ প্রথম প্রথম এই জঘন্য পাপগুলো করার পর কতো কাঁদতাম। ফুপিয়ে ফুপিয়ে, ডুকরে ডুকরে কাঁদতাম। ১০ -১২ হাজার বার করে ইস্তেগফার করতাম। আল্লাহ্ আমাকে এভাবেই শাস্তি দিচ্ছেন। . মোমবাতি গলে যাচ্ছে দ্রুত। মোমবাতি পুড়ছে। নিজেকে পুড়িয়ে আমাকে আলো দিচ্ছে। আমিও না হয় আজ নিজেকে পুড়িয়ে কিছুটা আলো দেবার চেষ্টা করি। অন্ধকারে আছি বলেই হয়তো খুব ভালোভাবে আলোকে আলাদা করতে পারি। বুঝতে পারি আলোর মহিমা!'
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, অনেকদিন বিরতি দিয়ে পর্ন দেখা বা হস্তমৈথুন করার ঠিক পরের কিছুটা সময় বা কয়েকটা দিন খুব সাবধানে থাকতে হয়। একটু অসতর্ক হলেই, একটু গা ছাড়া দিলেই শয়তান এসে ক্যাঁক করে ধরে। পরপর বেশ কয়েকবার পর্ন দেখা বা মাস্টারবেট করা হয়ে যেতে পারে। কেন এমন হয়?
প্রথমত, অনেক দিন নিজের সাথে যুদ্ধ করে পর্ন দেখা বা হস্তমৈথুন করা থেকে নিজেকে বাঁচানোর পর হঠাৎ বাঁধ খুলে দিলে জোয়ার নামা খুব স্বাভাবিক। অল্প একটু পর্ন দেখে বা মাত্র একবার মাস্টারবেট করে নিজেকে তৃপ্ত করা যায়না (পর্ন দেখে বা মাস্টারবেট করে অবশ্য কক্ষনোই নিজেকে তৃপ্ত করা যায়না। সাময়িক তৃপ্তির কথা বলছিলাম আরকি) তাই বেশ কয়েকবার মাস্টারবেট করতে মন চায়।
দ্বিতীয়ত, অনেকদিন পর্ন দেখা থেকে নিজেকে বিরত রাখলে কিছুটা হলেও স্মৃতি ফিকে হয়ে যায়। স্মৃতির জোয়ার আপনাকে ভাসিয়ে দিয়ে আবার পর্ন দেখতে বাধ্য করার শক্তি হারিয়ে ফেলে অনেকাংশেই। কিন্তু অনেকদিন পর একবার পর্ন দেখা হয়ে গেলে মরে যাওয়া স্মৃতির গোড়ায় পানি ঢালা হয়। স্মৃতিরা নতুন উদ্যোমে মাথা তোলে। ফলাফল আবার ঘনঘন পরপর বেশ কয়েকবার পর্ন দেখে হস্তমৈথুন করে ফেলা।
তৃতীয়ত, অনেকদিন পর শয়তান আপনাকে বাগে পায়। এতোদিন সে আপনাকে দিয়ে পাপ করাতে পারেনি। আজ সুযোগ পেয়েছে। সে সর্বশক্তি নিয়োগ করে আপনার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। আপনাকে ক্রমাগত কুবুদ্ধি দিতে থাকবে। ওয়াস ওয়াসা দিতে থাকবে।
চতুর্থত, এটা বেশ শক্তিশালী একটা কারণ। দীর্ঘদিন পর প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ায় আপনি হতাশ থাকবেন। গভীর দুঃখবোধ আপনাকে ভেঙ্গে চুরে ফেলবে। নিজেকে ঘৃণা করতে শুরু করবেন আপনি সেই মুহূর্ত থেকেই। এই নাজুক সময়ে নিজের হতাশা,দুঃখ,ঘৃণা, ভবিষ্যৎ ভাবনা, ক্রোধ সব ভোলার জন্য আপনি আবার ডুব মারবেন পর্নভিডিওতে।
তাই এই কয়দিন খুব হুঁশিয়ার থাকতে হবে আমাকে। কোনমতেই এই ফাঁদগুলোতে পা দেওয়া যাবেনা। আসক্তির প্রথম প্রথম কতোবার যে এই ফাঁদগুলোতে ফেসেছি।
মোমবাতির শিখা স্থির হয়ে গিয়েছে। বাতাস বলে কোন বস্তু ধরাধামে আছে বলে মনে হচ্ছেনা। গরম আরো বেড়েছে। ভ্যাঁপসা চিটচিটে গরম। যা বলছিলাম। প্রথম প্রথম এই ফাঁদগুলোতে অনেক ফেঁসেছি। পোড় খাওয়া আমি তারপর কিছুটা বুঝতে পারলাম কীভাবে এই ফাঁদগুলো থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।
পর্ন দেখে ফেলার পর বা হস্তমৈথুন করে ফেলার পর আর একটুও দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করে ফেলুন। তারপর ওযু করে দু রাকা’আত নামাজ পড়ে ফেলুন। মন খারাপ করে দীর্ঘশ্বাস আর দুশ্চিন্তা দিয়ে করুণ কাহিনী লিখার কোন দরকার নেই আপনার। যতোটা ভাবছেন ততোটা খারাপ কিছু হয়নি। বিছানায় শুয়ে পড়লে, একা একা থাকলে আপনার সমূহ সম্ভাবনা আছে আপনি কিছুক্ষণ পর আবার পর্ন দেখবেন।
মানুষ জনের কাছে যান। গল্প গুজব করুন। বাসায় ফোন করুন। বাবা মার সঙ্গে কথা বলুন। রোদে যান। আলো আর উষ্ণতার স্বাদ নিন। ভেঙ্গে পড়বেননা। একজন কাছের বন্ধু বা কাছের কোন মানুষের সাহায্য নেওয়া খুব জরুরি। যার সঙ্গে আপনি সবকিছু শেয়ার করবেন। সবখুলে বলে তার সাহায্য চাইবেন। অধিকাংশ মানুষই এই কাজটা করতে চায়না। গুরুত্ব দেয়না। কিন্তু এই কাজটা যে কতোটা জরুরি এবং ইফেক্টিভ যারা এটি করেছেন তারা খুব ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। প্রথম প্রথম আমিও গুরুত্ব দিয়েছিলাম না। পর্ণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তেমন সুবিধা করতে পারছিলাম না। পরে এক মেঘলা বিকেলে একজন বন্ধুকে সব বললাম। সাহায্য চাইলাম। এরপরে আল্লাহ্র ইচ্ছায় ম্যাজিকের মতো সব কিছু ঘটতে থাকলো। খুব দ্রুত পর্ন দেখার পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে পেরেছিলাম।
এই কয়েকটি দিন এমন কোন বন্ধু বা কাছের মানুষকে নয় নম্বর বিপদ সঙ্কেত জানিয়ে দিন। খুব বেশি বেশি তাঁদের সংস্পর্শে থাকুন। (কাছের মানুষ বলতে আবার গার্লফ্রেন্ড মনে করবেন না। গার্লফ্রেন্ড পর্ন আসক্তি ছাড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায়। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তো আছেই সেই সঙ্গে অনেক লোকের সাথে কথা বলে দেখেছি)
যে ডিভাইসে পর্ন দেখেছিলেন সে ডিভাইস তালাবদ্ধ করে রাখুন। তার পূর্বে ফেসবুক একাউন্ট ডিএক্টিভেট করে নিতে ভুলবেননা। মনে মনে স্থির সংকল্প করুন যে আগামী তিন চারদিন ফেসবুকমুখো হবোনা । এন্ড্রোয়েড ফোনে পর্ন দেখলে তা তালাবদ্ধ করার পূর্বে সিমখুলে কমদামি একটি ফোনে নিয়ে নিন।
সবচেয়ে ভালো হয় বন্ধু বা কাছের কারো সাহায্য নিয়ে ফোনে স্পিন ব্রাউজার ইন্সটল করে নেওয়া। আর পিসির জন্য K9 । ব্যস খেল খতম। যা হবার হয়েছে ভুলে যান। শুর থেকে আবার সবকিছু শুরু করুন।
বেশি বেশি দান সদকা করুন। নামায এবং কুরআন পড়ার ব্যাপারে সিরিয়াস হন। মসজিদের বারন্দায় গিয়ে বসে থাকুন। স্রেফ বসে থাকুন।
এই নাজুক সময়ে ইস্তেগফার পড়লে বেশ কাজে দেয়। একবার এক ভাইয়ের কাছে শুনেছিলাম যে সে ১২ হাজার বারেরও বেশি ইস্তেগফার করেছিল।
পর্ণের দৃশ্যের কথা মাথায় আসা মাত্রই আপনি নিজের জন্য এবং ঐসব পর্ন অভিনেতা অভিনেত্রীদের জন্য দু’আ করবেন। পড়ুন- এই লিখাগুলো- দু’আ তো করেছিলাম -ফাঁদ (প্রথম পর্ব ) -ফাঁদ – দ্বিতীয় পর্ব- ফাঁদ’ (তৃতীয় পর্ব) -‘ফাঁদ’ (চতুর্থ পর্ব ) -ফাঁদ (ষষ্ঠ পর্ব)
বেশি বেশি পর্ন এবং মাস্টারবেশনের ক্ষতিকর দিক নিয়ে লিখাগুলো পড়তে হবে। দিনে অন্তত একবার করে।
এবার আসুন হতাশার কথায়। দেখুন পর্ন দেখার পরে বা মাস্টারবেট করার পরে হতাশা, বিষণ্ণতা আসাটা খুবই স্বাভাবিক। আল্লাহর আইন অমান্য করার কারণে বিষন্নতার বর্ষা আপনাকে ভিজিয়ে ছাড়বেই। সেই সাথে পর্ন দেখার ফলে মস্তিষ্কে ডোপামিনের তেলেসমাতি। মড়ার ওপর খড়ার ঘা হিসেবে রুটিন ওলট পালট হয়ে যাওয়া। মন খারাপ করে বসে থাকলে বড় ভুল করবেন। অনেকেই ভীষণ দুঃখবোধ নিয়ে ঘুমুতে যায়। তিনচার ঘন্টা সেঁটে ঘুমানোর পরেও দুঃখবোধ নিয়েই ঘুম ভাঙ্গে। কাজের কাজ কিছুই হয়না। খাওয়া গোসল নামাজ পড়াশোনা সব শিকেয় ওঠে। এবেলার ভাত ওবেলা। মানসিক শূন্যতা তো আছেই সেই সাথে শরীরও দুর্বল হয়ে পড়ে। এই দুর্বলতা কাটাতেই নষ্ট হয়ে যায় জীবনের মূল্যবান কয়েকটা দিন।
ভাই চলুন একটু অন্যভাবে চিন্তা করি। আপনার আশেপাশেই কতো অসংখ্য মানুষ রয়েছে যারা ভয়ঙ্কর রকমের পরনাসক্ত। কিন্তু এ নিয়ে তাদের তেমন কোন মাথা ব্যাথা নেয়। জীবনের একটা অংশে পরিণত করেছে পর্ন দেখে হস্তমৈথুন করা বা গার্লফ্রেন্ডের সাথে রুম ডেট করাকে।
আপনার অবস্থা কি তাদের চেয়ে ভালো নয়? আপনার মধ্যে কী পাপের অনুভূতি, হারাম হালালের অনুভূতি কাজ করেনা? এতো হতাশ হচ্ছেন কেন? যে সমাজ অশ্লীলতায় সয়লাব হয়ে গিয়েছে যে সমাজে পর্ন অভিনেতা, অভিনেত্রীরা ঘরের মানুষ হয়ে গিয়েছে সেই সমাজে আপনি স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মুক্ত বাতাসের খোঁজ করছেন, টগবগে নিজের ভেতরটাকে শেকল পরিয়ে রাখতে চাচ্ছেন এটা কী বড় এক বিজয় নয়?
আদমেরই তো সন্তান আমরা। আদম (আঃ) ভুল করেছিলেন। আবার তওবা করে সংশোধন হয়েছিলেন। আমাদেরও তো ভুল হবে ভাই। একের পর এক ভুল করব আমরা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুল করব। আর বারে বারে আল্লাহ্র কাছে নত হব। নত হতে হতে দিন পার করে দিব। আল্লাহ্ তো এটাই চান।
ভাই নিজের ওপর রহম করুন । আপনি শেষ হয়ে যাননি। জীবনতো আমাদের কেবল শুরু। এখনি আমাদের যাবার বেলা হয়নি।
এখন আমরা কলুষতায় আকন্ঠ ডুবে আছি তাই বলে ভবিষ্যত এরকমই হবে সেটা তো কোথাও লিখা নেই। উমার ইবনে খাত্তাবকে (রাঃ) দেখুন । একসময় ছিলেন পাড় মাতাল। মদে চুর হয়ে থাকতেন । ছিলেন ইসলামের ঘোরতরো শত্রু। তিনি কখনো ইসলাম কবুল করবেন এ কথা ভুলেও কেউ ভাবেনি। বলা হতো যে খাত্তাবের গাধা ইসলাম কবুল করলেও করতে পারে কিন্তু উমার? কক্ষনো নয়।
তিনি কি ইসলাম গ্রহণ করেননি ? দুনিয়াকে দেখাননি অতীত মুছে ফেলা যায়।
আপনি মন খারাপ করে অলস হয়ে হতাশায় ডুবে থাকলে কিছুক্ষণ পর হয়তো আবার পর্ন দেখতে চাইবেন। হস্তমৈথুন করবেন। কয়েকদিন হয়তো চলবে একটানা। এই দুঃখকে, এই শোককে কিন্তু একটু ভিন্নভাবে ভাবলেই শক্তিতে পরিণত করা যায়। পর্ন আসক্তির বিরুদ্ধে পরবরতি লড়াইয়ের রসদ জোগাড় করা যায়। এর পরের বার যখনই পর্ন দেখতে মন চাইবে বা হস্তমৈথুন করার তাগাদা আসবে তখন এই বিশাল রিক্ততা, শূন্যতায় ভরা মুহূর্তগুলোর কথা স্মরণ করবেন। নিজেকে প্রশ্ন করবেন আমি আবারো কী এই বেদনাবিধুর সময় পার করতে চাই ?
ভাই, আমাদের আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আল্লাহ্ (সুবঃ) আমাদের পুনরায় সুযোগ দিয়েছেন। এমনোতো হতে পারতো আমাদের বাবা মা আমাদের হাতে নাতে ধরে ফেললেন। পর্ন দেখার সময় মৃত্যু এসে কড়া নাড়লো আমাদের দরজায়! হতো পারতোনা? এরকম কি হয়না?
আল্লাহ্ (সুবঃ) আমাদের বাঁচিয়েছেন এই লজ্জার হাত থেকে, জঘন্য পরিণতির হাত থেকে।ভাই, আল্লাহ্ আমাদের এভাবে পানিতে ফেলে দিবেন না। তিনিই আমাদের কন্ঠনালীরও একদম নিকটে। আমাদের ওপর দয়া করাটাকে তো তিনি নিজের কর্তব্য বলে স্থির করেছেন। তিনি আমাদের ভুলে যাননি। না আমাদের পরিত্যাগ করেছেন। আমাদের গভীরের , গহীনের কষ্টগুলো তিনি জানেন। তিনি আমাদের ভুলে যাননি।
‘ তোমার মালিক কখনো কাউকে ভুলে থাকেননা’। (সূরা মারইয়াম,আয়াত ৬৪)
তিনি অচিরেই অবশ্যই অবশ্যই আমাদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দিবেন। আমাদের শুধু লেগে থাকতে হবে।
ইনশা আল্লাহ্ মুক্তি এই সামনেই!
‘আর অবশ্যই তোমার জন্য পরবর্তী সময় পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে উত্তম। আর অচিরেই তোমার রব তোমাকে অনুগ্রহ দান করবেন, ফলে তুমি সন্তুষ্ট হবে’। (সূরা দুহা, আয়াত- ৪-৫)
( লস্ট মডেস্টি টিম কর্তৃক অনুলিখিত)