- Published on
ভেঙ্গে ফেলো এই কারাগার (চতুর্থ পর্ব )
১৩. অবসর সময়ে/ যখন মন খারাপ থাকে তখন পর্ন দেখি, মাস্টারবেট করি । কী করব?
বই থেকে ‘তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে’ ও ‘ফাঁদ’ – এই শিরোনামের সবগুলা লিখা ভালোমতো পড়বেন।
ফাঁদ (প্রথম পর্ব ) - https://bit.ly/2CL3DXq
ফাঁদ – দ্বিতীয় পর্ব- https://bit.ly/2Od7b63
‘ফাঁদ’ (তৃতীয় পর্ব) - https://bit.ly/2Od4nWz
‘ফাঁদ’ (চতুর্থ পর্ব ) - https://bit.ly/2CPbF1s
ফাঁদ (পঞ্চম পর্ব)- https://bit.ly/2x77Puk
ফাঁদ (ষষ্ঠ পর্ব)- https://bit.ly/2NIckWN
তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে... (প্রথম পর্ব) - https://bit.ly/2p1ZBAe
তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে... (দ্বিতীয় পর্ব)- https://bit.ly/2COW6qx
তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে... (তৃতীয় পর্ব)- https://bit.ly/2Mo5ssx
তবু হেমন্ত এলে অবসর পাওয়া যাবে (শেষ পর্ব)- https://bit.ly/2ModIca
প্রেসার কুকার- https://bit.ly/2oZSN67
- সারাদিন ঘরে বসে থাকা যাবেনা। মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করতে হবে। খেলাধুলা করার সুযোগ না থাকলে বাহিরে গিয়ে হাটাহাটি করতে হবে। সমাজসেবা মূলক কাজে সাহায্য করা, ছাদে বাগান করা, বিড়াল,পাখি, খরগোশ পোষা মানে হবি টাইপের কিছুতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। - ছোটো ভাইবোন কাজিনদের সাথে ( মেয়েদের জন্য মেয়ে কাজিন, ছেলেদের জন্য ছেলে কাজিন) সময় কাটাতে হবে। বাবা মার সাথে কথা বলতে হবে। - ব্যায়াম করতে হবে। মসজিদে গিয়ে পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়লে মন ফ্রেশ হয়ে যাবে - সপ্তাহে একদিন কোথাও থেকে ঘুরে আসতে হবে। -পরকাল নিয়ে লেকচার সিরিজ শুনতে হবে। নবী রাসূল এবং সাহাবীদের জীবনি পড়তে হবে। এই বইগুলা পড়ে ফেলতে পারেন।হতাশা মন খারাপ কাটানোর জন্য খুব কার্যকরী ইনশা আল্লাহ্-
- তুমি ফিরবে বলে, জাকারিয়া মাসুদ (সমর্পণ প্রকাশন)
- যেকোনো একটা সীরাহ। আর রাহিখুল মাখতুম অথবা সীরাহ (রেইনড্রপ্স প্রকাশনী)
- সাহাবা কেরামের ঈমানদীপ্ত জীবনী, ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা (রাহনুমা প্রকাশনী)
- তাবেঈদের ঈমানদীপ্ত জীবনী, ড. আবদুর রহমান রাফাত পাশা (রাহনুমা প্রকাশনী)
- যৌবনের মৌবনে, মাওলানা জুলফিকার আহমাদ
- জীবিকার খোঁজে, ইমাম মুহাম্মাদ (প্রকাশনী : মাকতাবাতুল বায়ান)
- আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল, ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়া (প্রকাশনী : মাকতাবাতুল বায়ান)
- কুদৃষ্টি, মাওলানা জুলফিকার আহমদ
- নবীজির পদাঙ্ক অনুসরণ, ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ) (সীরাত পাবলিকেশন)
- দিনে এক ঘন্টা হলেও ক্লাসের পড়া পড়তে হবে। পড়াশোনা না করার কারণে অনেকেই হতাশায় ডুবে যায়। পড়াশোনা করলে হতাশা কেটে যাবে ইনশা আল্লাহ।
(যদি বুঝতে পারেন খুব বেশি মন খারাপ, আত্মহত্যার কথা বলছে, বা এটেম্পট নিয়েছেন তাহলে অবশ্যই অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিতে বলবেন। বাবা মাকেও সাথে নিয়ে যেতে বলবেন)
.
১৪. চটিগল্প পড়ি। ছাড়তে পারছিনা । কী করব?
পর্ন, মাস্টারবেশনে আসক্তদের যে টিপস দেন, এদেরকেও সেই একই টিপস দিবেন। এদের জন্য স্পেশাল কিছু টিপস হলো-
-ফেসবুকের সব চটিগল্পের পেইজ আনলাইক করে দিতে হবে। গ্রুপগুলো থেকে লিভ নিতে হবে। এই পেইজগুলো ফলো করতে হবে-
-কোনো বন্ধুর সাথে বাজে কথোপকথোনে জড়ানো যাবেনা। মেয়েদের সঙ্গে তো নয়ই। ফেইক আইডি থাকলে আইডি একেবারে নষ্ট করে ফেলতে হবে। যখনই চটি পড়তে ইচ্ছে করবে, তখনই আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাইবেন, আমাদের পেইজের বা গ্রুপের পোস্টগুলো পড়তে থাকবেন। দরকার হলে এডমিন বা মডারেটরদের নক দিবেন।
-প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবনী, সাহাবীদের জীবনী, ঈমানদারদের জীবনী পড়তে হবে। বইয়ের লিস্ট আগেই দেওয়া হয়েছে।
-ভাবী,কাজিন, ম্যাডাম,কাজের মেয়ে, মানে যাদের নিয়ে চটিগল্প পড়েন তাদের থেকে অবশ্যই দূরে দূরে থাকতে হবে। মানে পর্দা করতে হবে। ম্যাডামের ক্লাস করতেই হলে সামনে না বসে পেছনের সিটগুলোতে বসবেন। সুযোগ পেলেই চোখ নিচু করে রাখবেন। ইস্তেগফার করতে থাকবেন। ভাবী,কাজিন,কাজের মেয়ে এদের সাথে কঠোর পর্দা করতে হবে। না হলে পর্ন, হস্তমৈথুন তো বটেই জিনার সম্ভাবনাও থাকে। এগুলো মেনে না চললে এই আসক্তি কাটাতে পারবেন না।
-অনেকে ইনসেস্ট চটি পড়ে। মা,বোনদের নিয়ে ফ্যান্টাসি করে।এরকম হলে অবশ্যই সপ্তাহে একবার সূরা বাকারাহ পড়তে বা শুনতে হবে। আগের টিপসগুলা তো থাকবেই। আর এক ঘরে কখনোই ঘুমানো যাবেনা, এক বিছানাতে তো নয়ই। মা, বোন ঘুমিয়ে থাকলে কখনোই ঘরে ঢোকা যাবেনা। উনাদের জামা কাপড় থেকেও দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পারলে কয়েকদিনের জন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসতে হবে।
এই লিখাগুলা পড়তে দিবেন-
নেশা যখন চটি গল্প পড়া (প্রথম পর্ব) - https://bit.ly/2CPX7i8
নেশা যখন চটি গল্প পড়া (দ্বিতীয় পর্ব)- https://bit.ly/2NdygJX
নেশা যখন চটি গল্প পড়া (তৃতীয় পর্ব)- https://bit.ly/2CPWuoM
নেশা যখন চটি গল্প পড়া (শেষ পর্ব)- https://bit.ly/2p3KtCf
‘ফাঁদ’ (চতুর্থ পর্ব ) - https://bit.ly/2CPbF1s
সকাল সন্ধ্যার আমলগুলো করতে হবে। দরকার হলে https://www.facebook.com/groups/ruqyahbd/ এই গ্রুপে পোস্ট দিবেন। যিনার রুকাইয়া শুনবেন উনাদের পরামর্শ নিয়ে।
১৫. বাথরুমে পর্ন দেখি,মাস্টারবেট করি-
- খোলা জায়গায় গোসল করবেন যদি সম্ভব হয়। শরীরে কিছু কাপড় রাখবেন। পেনিস পারতপক্ষে ধরবেন না। তাকিয়ে থাকবেননা। সাবান দেওয়ার সময় বা লোম পরিষ্কার সময় খুব সতর্ক থাকবেন। বাজে চিন্তা মাথায় আসতে পারে এসময়। বিশেষ করে লোম পরিষ্কার করার সময় বাথরুমে যাবার আগে আল্লাহ্র কাছে দু’আ করে যাবেন। তিনি যেন আপনাকে হেফাযত করেন।
- কখনোই মোবাইল নিয়ে বাথরুমে যাবেননা। গোসল করার সময় দরজা খোলা রাখবেন অল্প একটু। যেন বাহিরে থেকে আপনি ভেতরে কি করছেন সেটা দেখা যায়/বোঝা যায়। বাথরুমের বাহিরে মোবাইলে কুরআন ছেড়ে রাখবেন। সাবধান বাথরুমের ভেতরে মোবাইল রেখে কখনো কুরআন ছেড়ে রাখবেননা।
- বেশি সময় থাকবেন না বাথরুমে। এটা নবীর(সাঃ) সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ।
- বাথরুমে প্রবেশের দু’আ পড়বেন। বের হবার পরেও দু’আ পড়বেন। হিসনুল মুসলিমিন এপ্স দেখে বা দু’আর বই দেখে শিখে নেবেন। লিংক- https://greentechapps.com/apps/hisnulbn
১৬. গান শুনা ছাড়তে চাই..
যেকোনো অভ্যাস ত্যাগের ২টি মূল স্টেপ থাকে। হোক সেটা পর্ন, মাস্টারবেশন অথবা গান বাজনা। আপনার এই দুইটাই ধারাবাহিক ভাবে ফলো করতে হবে।
-প্রথমত আপনার সব ডিভাইস থেকে যেকোনো ধরনের গান/ বাজনা সম্পূর্ণরূপে ডিলিট করে দিন। এটা করতে গিয়ে দ্বিতীয় কোনো চিন্তা করবেন না। শায়তান অবশ্যই আপনার চিন্তার ভিতর এসে আপনাকে অল্টারনেট পরামর্শ দিবে। যেমন- “এখনই ডিলিট করা দরকার নাই। আগে গান শোনা কমুক, আসতে আসতে ডিলিট কইরো।” অথবা - “আচ্ছা… ডিলিট কর… তবে এই দুইটা গান রাখ। একদিনেই তো সব বন্ধ করা পসিবল না…” শায়তানের এই ডাক আপনার কাছে আসার আগেই আপনি মেমরি থেকে সব শিফট-ডিলিট করে দিন। আপনি এই গান ছাড়া টিকবেন নাকি মারা যাবেন… এরকম চিন্তা হয়তো মাথায় আসবে। কিন্তু এখানে বলছি এই চিন্তা আসার আগেই যেন কাজটা করে ফেলেন। কোনো রকম চিন্তা করা যাবে না। আল্লাহ্র নাম নিয়ে ডিলিট করে দিন।
-দ্বিতীয়ত, আপনার এই গান শোনার যে অভ্যাসটা ছিল, এটাকে পরিবর্তন করতে হবে ভাল অভ্যাস দ্বারা। আল্লাহ্ তা’আলা কুরআনে এমনটিই আমাদের জানিয়েছেন সূরাহ ফুসসিলাতে। ৩৪ নং আয়াতে তিনি বলেন “... খারাপকে প্রতিহত কর ভাল দিয়ে...”।
সুতরাং এখন আপনার ভাল কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যা আপনার খারাপ অভ্যাসকে প্রতিস্থাপন করবে। কি কি করতে পারেন তার একটা সাজেশন দেয়া যেতে পারে- কুরআন পড়তে এবং শুনতে পারেন নিয়মিত। বই পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। বইয়ের লিস্ট-
- যেকোনো একটা সীরাহ, আর রাহিখুল মাখতুম, অথবা রেইনড্রপ্সের সীরাহ
- সাহাবা কেরামায়ের ঈমানদীপ্ত জীবনি, ড আবদুর রহমান রাফাত পাশা , রাহনুমা প্রকাশনী
- তাবেঈদের ঈমানদীপ্ত জীবনি ড আবদুর রহমান রাফাত পাশা, রাহনুমা প্রকাশনী
- নারী সাহাবীদের ঈমানদীপ্ত জীবনি ড আবদুর রহমান রাফাত পাশা , রাহনুমা প্রকাশনী
- যৌবনের মৌবনে, মাওলানা জুলফিকার আহমাদ নকশাবন্দী
- জীবিকার খোঁজে লেখক :ইমাম মুহাম্মাদ প্রকাশনী : মাকতাবাতুল বায়ান
- আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল লেখক :ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়া প্রকাশনী :মাকতাবাতুল বায়ান
- তাওহিদের মূলনীতি, আহমেদ মুসা জিবরিল, ইল্মহাউস পাবলিকেশন
- কুদৃষ্টি,মাহবুবুলওলামা হযরত মাওলানা জুলফিকার আহমদ (দা. বা.)
- নবীজির পদাঙ্ক অনুসরণ, ইবনে রজব হাম্বলী (রহঃ),সীরাত পাবলিকেশন
- অন্তরের রোগ ১ ও ২, শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ, রুহামা পাবলিকেশন।
ইসলামিক লেকচার শুনতে পারেন। পরকাল নিয়ে চিন্তা করুন, বই পড়ুন, লেকচার শুনুন।
ইসলামিক নাশীদ শুনতে পারেন। তবে এখানে সতর্ক থাকতে হবে। এখন অনেক নাশীদে ভাল ভাল টাইটেল থাকে কিন্তু ভিতরে ঠিকই বাদ্যযন্ত্র থাকে। এর চাইতে বরং কুরআন শুনুন। অন্তর বিগলিত হয়ে যাবে। শুনতে পারেন এগুলো- https://tinyurl.com/y4cylvmm, http://bit.ly/2lkMIBU
হালাল কাজে নিজে ব্যস্ত রাখুন। অফলাইন দাওয়াতের কাজ করুন। ব্যায়াম করুন। খেলাধুলা করুন। মোট কথা নিজেকে হালাল কাজে ব্যস্ত রাখুন যেন গান শুনার চাহিদা না থাকে।
আরেকটা জিনিস হলো পরিবেশ। এমন পরিবশে থাকবেন না যা আপনাকে গান শুনতে প্রলুব্ধ করে। পরিবেশ বলতে এখানে বন্ধু-বান্ধবও সম্পৃক্ত। বন্ধুরা হঠাত একটা গানের লিংক আপনাকে পাঠাতে পারে অথবা কনসার্টের ইনভাইটেশন দিবে। এগুলো আপনার পথকে অবশ্যই কঠিন করে দিবে। তাই দ্বীনি বন্ধু গড়ে তুলুন। তারা আপনার এই সমস্যায় আপনাকে সাহায্য করবে। আল্লাহ্র ইবাদতের দিকে আরও আহ্বান করবে। সবচেয়ে বড় কথা, সলাত কখনও ছাড়বেন না। সলাত পড়তে থাকুন আর দুআ করতে থাকুন। ইন শা আল্লাহ্ তিনি সহজ করে দিবেন।
আমরা খুব ছোটো মানুষ। আমাদের লিখার ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দিলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব ইনশা আল্লাহ্। যেকোনো ধরণের পরামর্শ বা সাজেশন হাইলি এপ্রিসিয়েটেড।
চলবে ইনশা আল্লাহ্ ...
পড়ুন আগের পর্বগুলোঃ
ভেঙ্গে ফেলো এই কারাগার (প্রথম পর্ব)