Published on

নীল রঙের অন্ধকার (দশম কিস্তি)

আমি তখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি। মা বাবার সাথে থাকতাম।পড়ালেখায় মোটামুটি ছিলাম।আমার বাবা একটু বদমেজাজি টাইপের ছিলেন।ছোটোকাল থেকেই তিনি পড়ালেখার জন্য কঠোর প্রকৃতির ছিলেন।পরীক্ষায় একটু ভুল করলেই তুলকালাম কান্ড শুরু করতেন। সবার সামনে অপমান করা, তুলনা করা, গালি দেওয়া এগুলো সাধারণ ব্যাপার।তবে তিনি কখনো নামায পড়তে নিয়ে যাননি বা উৎসাহও দেননি।

শাস্তির ভয়ে ধীরে ধীরে পড়ালেখায় উন্নতি হয় এবং ৫ম শ্রেনীতে বৃত্তিও লাভ করি।তবে আমার, পড়ালেখা ও বাবার প্রতি তেমন ভালবাসা ছিল না।আমি ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে থাকা অবস্থায় আমার বাবা মারা যান। তারপর আমরা নানার কাছে চলে আসি।এখান থেকেই শুরু হয় জীবনের নষ্ট অধ্যায়।আমার ছোট মামাও ছিল খুব রাগী। এদিকে বাবা না থাকাতে আমি এখন স্বাধীন মনে করতাম নিজেকে।

নানার বাড়ি অনেক বড় ছিল সামনে মার্কেট ছিল।পড়ার জন্য আলাদা রুম ছিল।তখন অবসর পেলেই বাইরে চলে যেতাম এবং দোকানের আংকেলদের সাথে গল্প করতাম।কারণ ঘরে থাকলে মামা,নানা নানী এদের ভাষণ শুনতে হতো।যেখানে কোন ভালবাসা ছিল না ছিল শুধু তিক্ততা। তাই বাইরের লোকদোর মিষ্টি মিষ্টি কথাগুলো খুব ভাল লাগত।এভাবে বছর খানেক কাটল।তখন ৭ম শ্রেণির শেষ দিকে।দোকানের এক আংকেল সবসময় মিষ্টি কথা বলত সে আস্তে আস্তে অশ্লীল কথা বলতে শুরু করল।তখন সেসব কথা শুনতে ভালই লাগত।সে নিজের গোপনাঙ্গও দেখাত।মাঝে মাঝে অশ্লীল ছবিও দেখাত।সে একদিন আমাকে হস্তমৈথুন করে দেখায় আর বলে ঘরে গিয়ে নিজে নিজে করার জন্য এতে নাকি শরীর ভাল লাগে।আর আমিও ঘরে গিয়ে শুরু করলাম। তখন কিন্তু আমার সপ্নদোষ শুরু হয়নি।

প্রথম প্রথম হস্তমৈথুন করতে অনেক সময় লাগলেও ধীরে ধীরে সময় কমে আসতে লাগল।একই সময় আর একটি ঘটনা ঘটে।আমার মামার বিয়ে উপলক্ষে মামার রুম পরিষ্কার করার দায়িত্ব পড়লো আমার উপর।এদিকে রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে আমার হাতে পড়ল এক গাদা চটি বই।আমার তো সোনায় সোহাগা।আমি সেখন থেকে কয়েকটি বই সরিয়ে রাখলাম।পরে সময় পেলেই অথবা পড়ার ফাঁকে এগুলো নিয়ে বসতাম।সেখানে ছেলে মেয়ের অশ্লীল ছবিও ছিল।আর কাহিনী গুলোর ভাষা সারাদিন মনের ভিতর গেঁথে থাকত।

ইচ্ছে মতো হস্তমৈথুন করতাম।রোযা রেখেও করতাম।নামায তো পড়তামই না জুমার নামাযে মাঝে মাঝে যেতাম।তবে নামায হতো না কারন নামাযের নিয়ম কানুন জানতাম না।আর নামায পড়তে গেলেই লিঙ্গ দিয়ে আঠালো পানি চলে আসত।এদিকে চটি কাহিনী পড়ে সারাদিন শুধু মেয়েদের দেহ নিয়ে ভাবতাম।

তখন ৮ম শ্রেনিতে প্রথম। বন্ধুদের সাথা বাংলা ছবি দেখতে যাই।আর বড় পর্দায় মেয়েদের অশ্লীলতা দেখে অবাক হয়ে গেলাম।তখন থেকেই সিনেমার নেশা।এদিকে পড়ালেখাও বরবাদ।আর একটি নতুন সমস্যা দেখা দিল তা হলো বেশি প্রস্রাব হতো আর হস্তমৈথুনের পর আরো বেশি প্রস্রাব হতো।তখন নামাযও শিখে নিয়েছি নিজে নিজে।নামায শিক্ষা বইয়ে এসবের কুফল যানতে পেরে হস্তমৈথুনের মাত্রা কমিয়ে দিলাম তবে একেবারে ছাড়তে পারিনি। সিনেমা আর চটি বই একেবারেই ছাড়তে পারিনি।

৮ম থেকে ৯ম শ্রেনীতে উঠলাম। রোল ৮থেকে হলো ১৭।মানে অবনতি।৯ম ও১০ম এই দুই বছর প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বাংলা সিনেমা দেখতাম। মাঝে মাঝে হস্তমৈথুন করতাম।এস এস সি পরীক্ষা য় কোনরকমে পাশ করলাম।

কলেজে উঠে নতুন নেশা লাগল।শহরে গিয়ে ইংরেজি ছবি দেখা আর বন্ধুদের সাথে সিডি ভাড়া করে পর্ন দেখা। এভাবে পড়ালেখা বরবাদ হয়ে গেল।ইন্টার আর পাশ করা হল না।এভাবে ৪ বছর গ্যাপ হওয়ার পর আবার নতুন করে পড়া শুরু করলাম।সব ধরনের অশ্লীল সিনেমা দেখা হস্তমৈথুন বাদ দিলাম।ইন্টার পাশ করলাম।ইন্টারের পর বন্ধুদের সাথে মিশে মেয়েদেরর প্রেমে পড়ে আবার পড়ালেখায় ২ বছরের গ্যাপ দিতে হল।তারপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। এখন মাস্টার্স কমপ্লিট করছি। এখন সিনেমা বাদ দিলে কি হবে সিনেমাতে যা তখন দেখতাম এখন বাংলা টিভি খুললেই তা দেখা যায়।

এখানে আমার জীবনের সম্পূর্ণ ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। কারণ এটা থেকে মানুষ অনেক শিক্ষা নেবে।এখানে আর একটি কথা বলে রাখা ভালো, যে আমাকে হস্তমৈথুন শিখিয়েছে সে অনেকবার আমার সাথে খারাপ কাজ করতে চাইছে।আরো যে সকল আংকেলদের সাথে মিশেছি তারা কয়কজন বাদে সবারই মনে খারাপি ছিল।আর আমি একটু ভীতু ছিলাম ছোট থেকেই।

এখান থেকে যে শিক্ষাগুলো নেওয়া যায়: ১.শিশুদেরকে সাহস দিতে হবে,পারিবারিক ভালবাসাই শিশুর নিরাপদ ভবিষৎ গড়তে সহায়তা করে। ২.পড়ার জন্য শিশুদের অতিরিক্ত টর্চার করা উচিত নয়, কারণ সকলের ক্ষমতা এক নয়। ৩.আজেবাজে বই ঘরে রাখা উচিত নয়। না পড়লে আরো ভাল। ৩.যখন কোন শিশু আপনার সাথে কথা বলে তাকে কখনো অশ্লীল শিক্ষা দিবেন না। আপনারও ছেলে ভাগিনা,ভাইপো থাকতে পারে।আর যে শিশুকে খারাপ শিক্ষা দিবেন সে বড় হয়ে আপনাকে ঘৃনা করবে। ৪. আর পড়াশোনা করা অবস্থায় কোন মেয়ের সাথে প্রেম করবেন না।

চলবে ইনশা আল্লাহ ...