(লিখেছেনঃ ডা. শামসুল আরেফীন)
ভূমিকা
সবারই একটা অতীত থাকে। আজকের দরবেশেরও একটা অতীত ছিল। আজকের পাপীরও একটা ভবিষ্যত আছে। যাকে গুনাহ করতে দেখলেন, হয়তো তাকে দীর্ঘ লড়াইয়ের ‘একটা খণ্ডযুদ্ধে’ পরাস্ত হতে দেখলেন। সারাদিন এমন কতশত যুদ্ধে সে বিজয়মাল্য পড়ে, তা আপনার আমার জানারও কায়দা নেই। এজন্য বদ ধারণা করব না, হতাশ হব না। জীবনটাই যুদ্ধ, অদৃশ্য শত্রু নফস আর শয়তানের বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধ। কখনও জিতব, কখনও হারব। তবে লড়া থামবে না, আত্মসমর্পণ করা চলবে না। অনেক ভাই নীল কৃষ্ণগহ্বরে আটকা পড়েছেন। উঠে আসার আকুতি বুকে নিয়ে কেউ উঠে এসেছেন অলরেডি, কেউ পা হড়কে পিছলে যাচ্ছেন, আবার উঠে আসবার চেষ্টা করছেন। দ্রুত মূল টপিকে চলে গেলাম। অনেক আলোচনা। বাই দ্য ওয়ে, আগে নিয়ত সহীহ করে নিই। এই লেখাটা লিখছি, নিজে প্রতিদিন একবার করে পড়ব বলে। আর এটা যদি কারো বিজয়ের উসীলা হয়, তাহলে আমার পরাজয়গুলো তার দুআয় মাফ হয়ে যেতেও পারে। আল্লাহুম্মা আমীন। পর্ন দেখা একটা নেশা। মাদক আমাদের ব্রেনের যে জায়গাগুলোকে উত্তেজিত করে, পর্নও তাই। আমাদের ছোট ছোট প্রতিটি আনন্দের অনুভূতির মাধ্যম হিসেবে কাজ করে ব্রেনের এক প্রকার কেমিক্যাল— ডোপামিন। অল্প অল্প করে বের হয়ে আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়। মাদক যে কাজটা করে, অনেক পরিমাণে ডোপামিন বের করে, ফলে অনেক বেশি মজা লাগে। একই পরিমাণ মজা মাদকাসক্ত আবার পেতে চায়, তাই বার বার নেয়। আসক্তি হয়ে গেল। এরপর যে পরিমাণ ডোপামিন বেরোলে মজাটা হত, সেই পরিমাণ ডোপামিন বের করতে মাদকের ডোজ বাড়াতে হয়, আগের ডোজে আর ঐ পরিমাণ বেরোয় না। পর্নোতেও একই ঘটনা ঘটে, একটা পর্যায়ে একই জাতীয় পর্নো আর ভাল্লাগে না, বৈচিত্র চাই। আমার মতে, মাদকের মতই পর্নো ছেড়ে দিতে চাইলাম, আর দিয়ে দিলাম, ব্যাপারটা এমন না হবার সম্ভাবনাই বেশি। কয়েকস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া চাই। কিছু জিনিস ছাড়তে হবে, আর মজার কিছু খোরাকও ব্রেনকে দিতে হবে। পর্ন যে পরিমাণ ডোপামিন নিঃসরণ করতো, ঐ পরিমাণ ডোপামিন আপনাকে বিকল্পপথে সরবরাহ করতে হবে।১. ব্যক্তিগত আচার:
- পেশাব-পায়খানা-গোসল সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে না করা। যদিও জায়েজ, আল্লাহকে লজ্জা করার একটা অভ্যাস তৈরির জন্য করব। একান্ত প্রয়োজনের সময় আল্লাহকে লজ্জা করা অভ্যাস হলে, গুনাহের সময়ও লজ্জা চলে আসবে।
- নিজ লজ্জাস্থানের দিকে না তাকানো, স্পর্শ না করা। উসমান রা. তাকাতেন না। শয়তানের ধোঁকা আসতে পারে। প্লাস লজ্জার প্র্যাকটিস।
- কোলবালিশ ব্যবহার না করা। ঘর্ষণে কামভাব জাগতে পারে।
২. আদাবুল ইন্তারনেত:
- বিছানায় শুয়ে মোবাইলে নেট ইউজ করবো না, বসে করব।
- অহেতুক ইন্টারনেট ব্রাউজ করব না। অহেতুক ফেসবুক স্ক্রল করব না।
- রাত ১০টার পর নেটের সাথে কোন সম্পর্ক রাখব না।
- একাকী যখন থাকব তখন নেট ব্যবহার করব না। সবার সামনে করব।
- ধরেন টাইম মেশিনে করে গিয়ে একজন সাহাবী রা.কে যদি আজকের যুগে আনা যেত তিনি কী করতেন জানেন? তিনি ইন্টারনেটই ব্যবহার করতেন না, স্মার্টফোনই ব্যবহার করতেন না। যে জিনিস আমাকে আল্লাহর কাছে আসতে দেয় না, রসূলের বিরাগভাজন করে, সেই জিনিসই রাখব না। তাঁরা এমনই ছিলেন। নামাযের মধ্যে বাগানের কথা মনে পড়েছে, ঐ বাগানই সদকা করে দিতেন। জিহাদের শাহাদাতের মাঝে নববধূর চেহারা ভেসে উঠেছে, যাহ বিবিই তালাক। জিহাদ থেকে পালানোর চিন্তা আসতে পারে, ঘোড়াই মেরে ফেলব, যাতে পালাতে না পারি। যে বস্তু আমাকে আল্লাহ থেকে, জান্নাত থেকে দূরে নিয়ে যায়, সেই বস্তুই ত্যাগ করতেন। গুনাহ ত্যাগ করার জন্য, গুনাহ হবার সকল সম্ভাব্য পথকেই ত্যাগ করতেন। এটাই ‘সীরাতাল্লাযীনা আন’আমতা আলাইহিম’, সাহাবাদের পদ্ধতি। নিজেকে এই অবস্থার উপর তৈরি করতে হবে। টার্গেট ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি’, এর জন্য যা লাগে করতে প্রস্তুত, যতটুকু লাগে করতে লাব্বাইক।
- হ্যাঁ, ইন্টারনেটে অনেক লাভ আছে। ইনফ্যাক্ট এই লেখাটাও ইন্টারনেটেই পড়ছেন। তবে ইন্টারনেট যার পর্নো-হস্তমৈথুনের কারণ হচ্ছে, তার জন্য এসব লাভ কোনো লাভই না। তার লাভের চেয়ে লস হচ্ছে ঢের ঢের বেশি।
৩. সামান্য ছিদ্র:
এই পয়েন্টটা খুব বুঝার আছে। উস্তায উমায়ের কোব্বাদি হাফিজাহুল্লাহ বলেন, একই গুনাহ বার বার হচ্ছে, মানে এটা নফসের গুনাহ, শয়তানের না। তবে শয়তান নফসকে জাগিয়ে দেয়। আর নফস নিজের চাহিদা পুরা করার সুযোগ খোঁজে। ধরেন আপনি খুব ডিটারমাইন্ড, হয় এস্পার নয় ওস্পার। আর পর্নো দেখব না, হস্তমৈথুন করব না। আপনার প্রতিজ্ঞায় কোন খুঁত নেই। কিন্তু ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ সুন্দরী কোন মেয়ের ছবি চলে এল, বা ফ্যাশনের পেজের কোন মডেল চলে এলো, তেমন উগ্র পোশাকও না। আপনি কিছুক্ষণ দেখলেন। আপনার প্রতিরোধ ব্যবস্থায় একটা ছিদ্র তৈরি হল। এই ছিদ্র বড় হতে থাকবে সারাদিন ধরে, এক পর্যায়ে অঘটন ঘটে যাবে। খুব খেয়াল করে দেখবেন, যেদিন অঘটন ঘটেছে সেদিন হয় এমন কিছু দেখেছেন,- বা কোন গান-নাচ দেখেছেন,
- বা সিনেমা,
- বা পোস্টার চোখে পড়েছে, আপনি চোখ না সরিয়ে একটু দেখেছেন,
- কিংবা কোন পথচারী মেয়েকে একটু দেখেছেন।
- বা কোন ফরজ/সুন্নাত নামায ইচ্ছে করে ছুটেছে,
- বা রোজানা করেন এমন কোন নফল আমল অলসতা করে বাদ দিয়েছেন ইচ্ছে করে।
মানে ‘আল্লাহর স্মরণ’ হল ব্যারিকেড, এই ব্যারিকেডে যেকোন সামান্য ছিদ্রের সুযোগটা শয়তান নেবে। ঐ ছিদ্র দিয়ে নফসকে একটা খোঁচা দিয়ে জাগাবে। বাকিটুকু নফসেই করে নেবে। অতএব গাফেল থাকা যাবে না—
- গান শোনা-নাটক-সিনেমার অভ্যাস বাদ দিতে না পারলে পর্ন-হস্তমৈথুন ছাড়ার চিন্তাও বাদ দেন।
- নজরের হিফাজতে কোন কম্প্রোমাইজ নয়। নজর নিচে। কুরআনে আছে, শয়তান ওয়াদা করেছে, আদমসন্তানকে পথভ্রষ্ট করার জন্য আমি সামনে থেকে, পিছন থেকে ডানে থেকে, বামে থেকে আসব। উপর আর নিচ বলেনি। উপর দিকে তাকিয়ে রাস্তায় হাঁটলে আহত হবার সম্ভাবনা, তাই নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটা চাই। শুধু পর্নো না, সবরকম কুদৃষ্টির হিফাজত করতে হবে, কোন ছিদ্র রাখা যাবে না। নজর হেফাজতের পদক্ষেপ: (শাইখ উমায়ের কোব্বাদি-র মজলিস থেকে)
- অবনত চোখে চলা
- কুদৃষ্টির চাহিদা স্ত্রীর সাথে পুরা করা
- যার প্রতি কুদৃষ্টি পড়ল, তাকে নিজ মা-বোনের স্থানে কল্পনা করা। তবে এটার সুযোগ নেয়া যাবে না।
- সাথে সাথে ইস্তিগফার
- সর্বদা যিকিরের সাথে চলা। শয়তান যেন যিকিরের হাতিয়ার ছিনিয়ে নিতে না পারে।
- কৃপণ হলে অর্থের জরিমানা, অলস হলে আমলের জরিমানা (২ রাকাত সালাত) প্রতিবার খিয়ানতে।
- আজাবের কল্পনা, চোখে গরম শলাকা ঢূকানোর যাতনা কল্পনা করা। যে চোখ সামান্য বালি সহ্য করতে পারে না, তাতে জ্বলন্ত শলাকা ঢুকলে কেমন লাগবে?
- নারী/ নারী ছবির দিকে প্রথম দৃষ্টি থেকেও বাঁচতে হবে। যদি আভাস পাওয়া যায় যে এটা একজন নারী, প্রথম দৃষ্টিও দেয়া যাবে না।
- প্রতিদিন আপনি যে নফল আমলগুলো করেন, সেগুলো ইচ্ছে করে অলসতা করে বাদ দেবেন না।
- ফরজ যেন না ছোটে, বিশেষ করে জামাতের সাথে নামায।
- যেদিন প্রতিরক্ষায় ফাটল দেখা দিল, ঐদিন এক্সট্রা প্রতিরক্ষা জোরদার করতে হবে। কী করতে হবে নিচে বলছি।
- যেদিন আপনার অঘটন ঘটে, সেদিন একবারের জন্য হলেও ক্ষুধাটা নফস আগে জানান দেয়। ধরেন, আজ বাসায় কেউ থাকবে না, বেড়াতে যাবে। তো তারা যাবার আগেই নফস আমাকে একবার মনে করিয়ে দেবে, আজ কিন্তু সুযোগ। এই পূর্বাভাস থেকে ঐদিন প্রতিরক্ষা জোরদার করতে হবে—
- ডিভাইসের সাথে দূরত্ব,
- ইন্টারনেট টোটাল বন্ধ,
- ডিভাইসের চার্জ না রাখা,
- নিজেকে বাইরের কাজে ব্যস্ত রাখা,
- এক্সট্রা নফল আমল করা,
- ব্যায়াম জাতীয় ক্লান্তিকর কাজ করা যাতে তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসে। বিকেলের দিকে ব্যায়াম করবেন, দৌড়াবেন। তাহলেও এশার পরে ভেঙ্গেচুরে ঘুম চলে আসবে।
- আমি কয়েকবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলাম, আপনারা করবেন না, ওষুধ ভাল জিনিস না।
৪. কবে থেকে শুরু:
আজ থেকেই, এখন থেকেই শুরু। একটা ধোঁকা খুব আসে, আজকেই শেষবারের মত। আজকে একবার করে নেক্সট থেকে ভালো হয়ে যাব। না, এবার থেকেই লড়াই শুরু, এই মুহূর্ত থেকেই। আজগেই তোর-আমার মধ্যে একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে। আজকে বেঁচে গেলেই আল্লাহর কাছে আমার ধাম করে প্রোমোশান হবে। হারাম থেকে বাঁচলে আল্লাহ হালালের ভিতরে ঐ হারামের হাজারগুণ বেশি স্বাদ দান করবেন। দুয়া করুন: ইয়া আল্লাহ, হালালের ভিতর এই পরিমাণ স্বাদ দান করুন যেন হারাম থেকে বাঁচতে পারি।৫. কোন বাজে চিন্তা এলে:
অনেক সময় বাজে চিন্তা এসে পড়ে। আগের কোন নায়িকা বা পর্ন তারকার কোন দৃশ্য ভেসে ওঠে, এটা শয়তানের পক্ষ থেকে। কোন বদখেয়াল এলে চিন্তাকে ঘুরিয়ে দিতে হবে। হযরত আশরাফ আলী থানভী রাহ. বলেন, বদচিন্তা সমস্যার সমাধান হল ভ্রুক্ষেপহীনতা। মন্দ চিন্তা যদি আসে তবে আসুক। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই। এই চিন্তাই করবেন না যে, কী চিন্তা আসছে আর কী যাচ্ছে [1] । তবে এই চিন্তা ঘুরানোটা প্র্যাকটিসের বিষয়, একদিনে হবে না। প্র্যাকটিস হলো নামায আর যিকরুল্লাহ। যিকিরে-নামাযে ‘ছুটে যাওয়া’ মনকে বার বার ফিরিয়ে আনার অনুশীলন করি আমরা। প্র্যাকটিস করে করে মনের স্টিয়ারিং ঘুরানো সহজ হয়ে যাবে, প্রথম প্রথম অন্তরের উপর ভারি লাগবে। ধীরে ধীরে বিজয়ের আনন্দ হয়ে হয়ে একদম পানিভাত হয়ে যাবে। নামায সকল অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। অনেক হিকমাহ রয়েছে, তার মধ্যে এটাও একটা যে, আমি যদি নামাযে আমার মনকে ধরে রাখতে পারি সব ডিস্ট্রাকশানকে (মনোবিচ্ছিন্নতা) বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। তাহলে গুনাহের চিন্তাকেও শ্যাডো করে খেলা সহজ হয়ে যাবে। আল্টিমেটলি গুনাহটা ছেড়ে দেয়া সম্ভব হবে, যদি গুনাহের চিন্তাকে এড়িয়ে যেতে পারা যায়। গুনাহের চিন্তা আসাটা গুনাহ না, তবে সেই চিন্তাটা লালন করে স্বাদ নিলে একসময় বাস্তবে করেও ফেলবেন।৬. আমল:
কিছু আমলের কথা আলোচনায় আসবে। তবে দরজা খোলা রেখে আলমারিতে তালা দিয়ে লাভ নেই। মানে যথেষ্ট সতর্কতা নিয়ে এরপর আমলগুলো করলে কাজে দিবে। পর্নো দেখার উপায় সাথে রেখে (নেট+ডিভাইস) এগুলো খুব বেশিদিন আপনাকে ধরে রাখতে পারবে না। আগে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এরপর আমলগুলো করলে ফায়দা হবে।- নফল আমল বেশি বেশি। নফল সালাত (তাহাজ্জুদ, ইশরাক [2], চাশত [3], আওয়াবীন [4]), কুরআন তিলওয়াত, সকাল সন্ধ্যা যিকরের ওজীফা (সুবহানাল্লাহ-আলহামদুলিল্লাহ-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-আল্লাহু আকবার-লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ-ইস্তিগফার-দরুদ ১০০ বার করে প্রতিটা) কঠোরভাবে আদায় করতে থাকা। এগুলো হচ্ছে গুনাহ থেকে বাঁচার ব্যারিকেড। কেননা হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলা বলেন:বান্দা নফল আমলের দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করে। এক পর্যায়ে আমি তার চোখ হই যা দ্বারা সে দেখে, আমি তার কান হই যা দ্বারা সে শোনে, আমি তার পা হই যা দ্বারা সে চলে। (অর্থাৎ সব অঙ্গের কাজকর্ম আল্লাহর ইচ্ছাধীন হয়ে যায়)।
- রোজানা দাওয়াহ/ নাসীহা। মানে নিজের জবান দিয়ে এই কথাগুলো বের করা: আল্লাহ বাসীর (সর্বদ্রষ্টা), আল্লাহ শাহীদ (উপস্থিত), লাত্বীফুল খাবীর (গোপন বিষয় ও সর্ববিষয় অবগত)। আল্লাহর এই সিফতগুলোর আলোচনা যেন আমার জিহবায় থাকে। এক আসমান আরেক আসমানকে আড়াল করতে পারে না, এক যমীন আরেক যমীনকে তাঁর দৃষ্টির আড়ালে নিতে পারে না। একেলা গুনাহ করা যেন খোদ বিচারক নিজেই এখানে সাক্ষী। যে বিষয়ের দাওয়াত দিব, সেটা আমার ভিতরে আগে আসবে। এজন্য গোপন গুনাহ ত্যাগের বিষয়ের প্রতিদিন দাওয়াত দিব।
- প্রতিদিন ফজরের পর ১০ বার সূরা ইখলাস। লাভ হল, ঐদিন তার দ্বারা কোনো গুনাহ হবে না, যদি সে গুনাহ ছাড়ার সংকল্পের উপর থাকে। মানে দুর্ঘটনাবশত কোন গুনাহ আচানক হয়ে যাবে না। এটা হাদিস, রেফারেন্স এই মুহূর্তে দিতে পারছি না।
- প্রতি ফরজ নামাযের পর সূরা তাওবার শেষ দুই আয়াত পড়ে গা মাসেহ করা। এটা হাদিস না সম্ভবত। কোথাও পেয়েছিলাম। ভালো কাজ হয়।
- নফল সিয়াম তো আছেই। এক টানা নয়। একদিন বাদে একদিন, দাউদ আ. এর রোযা। তবে অপুষ্টি যেন না হয়। ডায়েট ঠিক করে নিতে হবে।
- প্রতিদিন কোন সময় শুধু দুয়া করা। ১০-১৫ মিনিট। আয় আল্লাহ, নফসকে দেখি না, শয়তানকেও দেখি না। আপনি সব দেখেন। আপনি সবার উপর ক্ষমতা রাখেন, ওরা আপনার উপর ক্ষমতা রাখে না। আয় আল্লাহ, এরা সব আপনার মাখলুক। আপনার এসব মাখলুকের ক্ষতি থেকে আমাকে বাঁচান। সদকার সাথে দুয়া বেশি কবুল।
- কে যেন বেশি বেশি ‘সূরা নাস’ আর ‘সূরা ফালাক্ব’ পড়তে বলেছিল। অর্থ বুঝে বুঝে। সূরা ফালাক্বে মাখলুকের ক্ষতি থেকে হিফাজতের কথা আছে, আর সূরা নাসে মানুষ ও জ্বীন শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়েছে।
- বিয়ের ফিকির করা যেতে পারে। তবে বিয়ে করলেই মুক্তি পাবেন, তা কিন্তু না। বিয়ে সহায়ক হতে পারে, কিন্তু আপনাকে গিলিয়ে চামচে করে খাইয়ে দেবে না।
- রমাদান কিন্তু সবচেয়ে বড় মওকা। রমাদানের বিধান দেয়াই হয়েছে যাতে আমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারি।
৭. গুনাহ হয়ে গেলে:
শয়তানের সবচেয়ে প্রিয় শিকার হল ‘হতাশ মুমিন’। এজন্য আল্লাহ তাঁর রহমত হতে নিরাশ না হতে বলেছেন। কোথায় যেন পড়েছিলাম, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে যাওয়া হারাম। শিরক ছাড়া আর সকল গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেবার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের গুনাহের সমষ্টির চেয়েও আল্লাহর রহমত আরও বেশি। তাঁর রাগের উপর রহমত বিজয়ী। এজন্য কখনো হতাশ হওয়া যাবে না। এতো প্রচেষ্টার পরও গুনাহ হয়ে যেতে পারে, অসতর্ক মুহূর্তে শয়তান দিয়ে দিতে পারে ধোঁকা। আল্লাহর ‘দয়া’র ভুল ব্যাখ্যা করেই ধোঁকা আসতে পারে। এর পরের বার থেকে ভালো হয়ে যাবার আশা দিয়ে গুনাহ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু নিরাশ হওয়া যাবে না। আবার উঠে দাঁড়াতে হবে। আগে পিওর তাওবা করেছিলাম, গুনাহ হয়েছে, আবার পিওর তাওবা করতে হবে।- প্রতিবার নির্ভেজাল তাওবার অভ্যাস থাকতে হবে। তাওবা মানে বুকে ছ্যাপ দিয়ে ‘তৌবা তৌবা’ বা ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়া না। তাওবা মানে ‘ফিরে আসা’, ইউটার্ন। ৩ জিনিসের সম্মিলিত নাম তাওবা:-
- প্রথমত, গুনাহটার উপর অনুশোচনা। ইস, করে ফেললাম। ইস, যদি না করতাম।
- দ্বিতীয়ত, আর না করার সংকল্প। সামনে আর জীবনেও করবো না। যেহেতু তাওবা তসবী টিপে ১০০ বার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ পড়ার নাম না। তাওবা হল আপনার আর আল্লাহর মাঝে একটা অমৌখিক চুক্তি। তাই আসলেই আপনার অনুশোচনা হয়েছে কি না, বা আসলেই আপনি সামনে আর না করার সংকল্প করলেন কী না, বা সংকল্পটা ইস্পাত না তুলতুলে— এগুলোতে লুকোছাপা বা জোচ্চুরি চলে না।
- তৃতীয়ত, যা করেছি, তা ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব হলে।
প্রতিবার নির্ভেজাল তাওবার অভ্যাস একদিন আপনাকে গুনাহ ছাড়িয়ে দিবে ইনশাআল্লাহ। তাওবা নিয়ে তাবলীগের এক মুরুব্বি একটা উদাহরণ দিয়েছিলেন, আমার খুব মনে ধরেছিল:
এক গ্রামের মহিলা শীতের শেষে শীতের কাপড়চোপড়-কম্বলটম্বল জ্বাল দিবে। সারাবছরের জন্য তুলে রাখতে হবে তো, তাই। এজন্য বড় ডেকচিতে পানি গরম দিচ্ছিল। হঠাৎ মায়ের কী যেন মনে হল, উর্ধ্বশ্বাসে ছুটে একটু উঠোনে গেল, ধরেন বাথরুমেই পেয়েছে। খেয়াল নেই যে পাকঘরের দরজা আটকাতে হবে। মা যখন টয়লেটে, এর মধ্যে আড়াই বছরের বাচ্চাটা মায়ের খোঁজে এসে ডেগচিতে পড়ে সিদ্ধ হয়ে ভাসছে। এখন মা ফিরে এসে পাকঘরে পা দিয়ে ডেগচির দিকে তাকিয়ে মায়ের প্রথম অনুভূতিটা কেমন হবে? হায়, আমি কী করলাম। হায় আমি কেন পাকঘরের দরজা আটকায়ে গেলাম না। এই অনুভূতিটা হল তাওবা। এক কঠিন অপরাধবোধ। ঐ মা, সারাজীবন এটা ভুলবে না, আরও ১০টা বাচ্চা হলেও এই ঘটনা ভুলবে না, এবং আর কোনোদিন পাকঘরের দরজা না আটকে যাবে না। এই অনুভূতি আসা চাই গুনাহ হবার পর।
আর, তাওবার পর যদি গুনাহের কথা ভেবে মজা লাগে, তাহলে ধরে নেবেন তাওবা কবুল হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা আল্লাহর কাছে ‘তাওবাতুন নাসুহা’র দুয়া করতে হবে, এমন তাওবা যা থেকে আর ফিরে আসা যায় না।
- গুনাহ হয়ে গেলে নিজেকে শাস্তি দেয়া যেতে পারে। অনেক আলিম এই পরামর্শ দিয়েছেন। একবার গুনাহ হয়ে গেলে ২০ রাকাআত নফল নামায, বা ৩ টা রোযা। এভাবে একটা পরিমাণ ঠিক করে নিলে ধীরে ধীরে কাজ হবে।
- গুনাহ হয়ে গেলে হাদিসের হুকুম সাথে সাথে কোনো নেক আমল করা। সাহাবী জিগ্যেস করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-ও কি একটা নেক আমল’। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: অবশ্যই।
- মেমোরিতে ক্লিপ ডাউনলোড রেখে বা বুকমার্ক সেভ করে রেখে বা ডাউনলোড করা পর্ন কোন ড্রাইভে সেভ রেখে মোবাইল থেকে ডিলিট করে দিয়ে তাওবা হবে না। সামনে আবার লাগবে, সামনে আবার গুনাহ করার জন্য রেখে দিলাম, আবার মুখে মুখে তাওবার দাবি করলে তাওবা হলো? আপনি নিজেই জানেন আপনি তাওবা করেছেন কী না।
৮. বিবাহিতদের জন্য:
অনেকে বিয়ে করেও এই সর্বনাশা ফাঁদ থেকে বেরুতে পারছেন না। অসভ্য জিনিস দেখে দেখে রুচিটাই এমন হয়ে গেছে, সভ্য একটা মেয়ে আর আপনার রোচে না। পর্নোবেশ্যাদের ছলাকলা নখরা ঐ পবিত্র গৃহবধূ জানবে কোত্থেকে। তাই আপনি আড়াল খোঁজেন, বউ থেকে আলাদা হলেই হারিয়ে যান নীল কৃষ্ণগহ্বরে।- বউ ছাড়া না থাকার চেষ্টা করবেন।
- প্রতিদিন সহবাস করবেন, যাদের বেশি পর্নের অভ্যাস। তাহলে চাহিদা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রতিবারই স্ত্রীকে অর্গাজম করাতে হবে এমন না। খাওয়াদাওয়া ঠিক থাকলে দুর্বল লাগার কথা না।
- মনে ওয়াসওয়াসা এলে, বা প্রতিরক্ষায় ফাটল এলে, বা গুনাহের স্বাদের কথা স্মরণ এলে সাথে সাথে বা দ্রুত স্ত্রীর সাথে প্রয়োজন পুরা করে ফেলবেন। প্রয়োজনটা রেখে দিবেন না। নফসকে কোনো চান্স দেয়া যাবে না। প্রয়োজনটা রেখে দিলে সুযোগমত নফস গুনাহ করিয়ে দেবে।
- স্ত্রীকে পছন্দের পোশাক ইত্যাদি কিনে দেবেন। মানে নতুন বেশে দেখবেন। নতুনত্বের আকাঙ্ক্ষা একটু হলেও চেক দেয়া যাবে। ব্রেনকে কিছু সারপ্রাইজ দিতে হবে, কিছু ডোপামিন রিওয়ার্ড দিতে হবে। সামনে আলোচনায় আসছে।
- এই সর্বনাশা রোগ থেকে বাঁচতে স্ত্রীদেরও সহায়তা দরকার। এটা স্ত্রীকে বুঝাবেন। তাঁর সহায়তা পেলে আপনার ছাড়া সহজ হবে। ‘মুক্ত বাতাসের খোঁজে’ বইয়ে বিস্তারিত আছে।
৯. নজরের হিফাজতের কিছু মোটিভেশান:
- মানহাজ নির্বিশেষে শাইখ যুলফিকার আহমদ নকশবন্দী হাফিযাহুল্লাহ-র ‘যৌবনের মৌবনে’ বইটা প্রতিদিন পড়া চাই। আরেকটা বই ‘ঘুরে দাঁড়াও’, লেখক ওয়ায়েল ইব্রাহীম। এগুলো প্র্যাক্টিস বুক। প্রতিদিন একটু করে পড়া চাই, পড়ে ফেলে রাখলে হবে না।
১০. নিজেকে পুরস্কার দিন:
পর্নো দেখা একটা নেশা, আগেই বলেছি। মগজে ডোপামিন ক্ষরণ বাড়িয়ে ‘রিওয়ার্ড সেন্টার’কে উদ্দীপিত করে। আমাদের সব সুখের অনুভূতির জন্য, তৃপ্তির অনুভূতির জন্য এই সেন্টারে ডোপামিনের পরিমাণ দায়ী। এজন্য পর্নো ছাড়ার জন্য বিকল্প পথে আমাকে ডোপামিন সরবরাহ করতে হবে। নিজেকে ছোট ছোট পুরস্কার দিতে হবে, সুখ পাবার ব্যবস্থা করতে হবে। একটু বিস্তারিত বলি। ডোপামিন আমাদের ব্রেইনের একটা ইম্পর্টেন্ট নিউরোট্রান্সমিটার বা নিউরহরমোন। মানে হলো কেমিক্যাল সিগন্যাল, যেটা সব ধরনের আনন্দ/তৃপ্তি/ মোটিভেশানের জন্য প্রধানত দায়ী। আমাদের মগজ সব ধরনের আনন্দের অনুভূতি এভাবে তৈরি করে, সেটা বেতন-বোনাস-লটারী জেতাই হোক, যৌনমিলন হোক, কিংবা হোক নান্নার কাচ্চি, অথবা নেশাদ্রব্য [5]। তবে ড্রাগ এ এলাকায় ডোপামিনের বন্যা বইয়ে দেয়, ফলে এত আনন্দ হয় যেটা আসক্ত লোক বার বার পেতে চায়। এভাবে নেশা বা আসক্তি হয় [6]। - মজাদার জিনিস ছেড়ে দিলে আল্লাহ বিকল্প মজাদার জিনিস দিবেন। এটা আল্লাহর অভ্যাস। - দৃষ্টি পড়ার পর যে আল্লাহর জন্য দৃষ্টি সরিয়ে নেবে, আল্লাহ জানান: আমি তাকে ঈমানের এমন স্বাদ দিব যা সে অন্তরে অনুভব করবে।- নিচের বিষয়গুলো সরাসরি ডোপামিনচালিত রিওয়ার্ড সিস্টেমের সাথে সম্পর্কিত:
- একটা ধ্যানমগ্ন নামাযের পর যে তৃপ্তি, দেখবেন তৃপ্তিটা আবার পেতে ইচ্ছে করে।
- ক্রন্দনময় একটা ইস্তেগফার সেশানের পর যে শীতল অনুভূতি, বার বার পেতে মন চায়
- কুরআন তিলওয়াতের সময় অর্থ বুঝতে পারার আনন্দ বা মজাটা
- সিজদায় পড়ে কান্নার পর ফ্রেশনেস, লম্বা তিলওয়াতের সাথে তাহাজ্জুদ বার বার পড়তে মন চায়
নিজেকে এই রিওয়ার্ডগুলো বার বার দিন।
- কোনো একটা সাংগঠনিক কাজ করুন। একটা দাওয়াহ প্রোগ্রাম/ তাবলীগী জোড়/ মেহমানদারি/ দরিদ্রদের সাদাকা প্রোগ্রাম/ বা কোন একটা দীনের খেদমত/ শরীয়তসম্মত কোন সোশ্যালওয়ার্ক। দূরে দূরে থেকে নয়। নিজে দায়িত্ব নিয়ে, কষ্ট উঠিয়ে। কাজটা শেষ হবার পর আত্মতৃপ্তিটা রিওয়ার্ড সেন্টারের সাথে রিলেটেড। এরকম কাজ বার বার করুন।
- নিজের প্রতি আল্লাহর অবারিত নিয়ামত স্মরণ করুন। আল্লাহ আপনাকে কী কী নিয়ামত দিয়েছেন। প্রতিটি নিয়ামত, প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটা, সন্তানের সাথে কাটানো প্রতিটি সেকেন্ড, স্ত্রীর সাথে খুনসুটির প্রতিটি শব্দ উপভোগ করুন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। আলহামদুলিল্লাহ শরীর সব রোমকূপ থেকে বলুন। এটাও ডোপামিনকে বাড়াবে। বার বার বলুন। এগুলোতে নেশাসক্ত হোন।
১১. যাদের শারীরিক ক্ষতি হয়ে গেছে তাদের কী করণীয়:
- প্রথমত বদভ্যাস একেবারে ছেড়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় কোনো অপশন নেই।
- অনেকে বিয়ে করতে ভয় পান। যদি সকালে লিঙ্গোত্থান হয় (morning erection), মানে ঘুম থেকে জেগে মাঝে মাঝে লিঙ্গ শক্ত পান, তাহলে নির্ভয়ে বিবাহ করুন। বাকি যেটুকু শেখার বিয়ের আগের রাতে আমাকে বা ডা. মেহেদী ভাইকে নক করে সিলেবাসটা নিয়ে নিন।
- লিঙ্গের আকার যাই হোক, গঠন বিগড়ে যাক, কোনো সমস্যা নেই। ঠিক করার জন্য কলিকাতা হার্বাল বা শিয়াল/ গন্ধগোকুল তেল মালিশ করবেন না, যেটুকু আছে সেটুকুও হারাবেন না। কিছু টেকনিক জানলে যেটুকু বাকি আছে , ওতেই সর্বোচ্চ উইকেট অর্জন করা সম্ভব। কোনো দুশ্চিন্তা নয়, বৎস।
- বীর্যের মত পাতলা তরল আসছে/ বীর্য পাতলা হয়ে গেছে/অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হচ্ছে/ প্রসাবের শেষে আঠালো পদার্থ বের হচ্ছে/ প্রস্রাবের উপরে কী কী যেন ভাসে। যা ইচ্ছা তাই হোক। এগুলা কোন অসুখ না। কলিকাতা হার্বাল আমাদের মনে গেঁথে দিয়েছে, তোমার শরীর থেকে কী না কী বেরিয়ে যাচ্ছে, তু তো গ্যায়া। যা হয় হোক।
- মধু
- তরমুজ
- বাঁধাকপি
- ফুলকপি
- ফলমূল
- প্রচুর পানি
- চীনেবাদাম
- কলা
- আপেল
- রসুন
- পেঁয়াজ
- তীন ফল
- পুঁইশাক
- ডালিম
- কুমড়ার বীচি
- মিষ্টি আলু
- ডিম
- মিসওয়াক (indiatimes.com)
- দুধ
- ব্ল্যাক চকলেট
নিচের খাবার গুলো পরিহার করুনঃ
- আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার (কোক, জুস)
- পপকর্ন
- অতিরিক্ত লবণ
- এলকোহল
- পনির
- রেডমিট অধিক
- সোডা বেভারেজ (কোক, এনার্জি ড্রিংক জাতীয় সব)
- সিগারেট (তামাক জাতীয় সব)
- গাঁজা
- চিংড়ি
- মিন্ট (চকলেটে থাকে)
- বোতলজাত পানি
- বেশি ঝাল/মসলাযুক্ত খাবার (চিপস, চানাচুর)
- বেশি কফি
- জাংক ফুড
- অনেকের আবার মনে হয় নামাযের মধ্যে কী যেন বেরিয়ে আসছে, বা সবসময় কী যেন বেরোচ্ছে। এগুলো শয়তানের ওয়াসওয়াসা। আপনার মনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে শয়তান আপনাকে আমলের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। ইগনোর করুন, পাত্তা দেবেন না।
- আর পায়খানার চাপে বা যেকোন ভাবে পাতলা তরল বের হলে গোসল করতে হয় না, কেবল অযু করে কাপড় বদলে নিলেই চলে। শুধু জোরসে তৃপ্তির সাথে ঘন তরল বের হলে গোসল ফরজ হয়।
- স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, চোখে কম দেখা ইত্যাদির জন্য আসলে কিছু করার নেই। খাওয়া দাওয়া ঠিক রেখে ডাক্তারের পরামর্শ মত চলবেন। এগুলো ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
- আর দুয়া করতে হবে। আল্লাহ, যে ভুল করার করে ফেলেছি, মাফ করে দেন। আর ভুলের ক্ষতি থেকে বাঁচান।
- আর যদি লিঙ্গ একেবারেই নিস্তেজ থাকে, মর্নিং ইরেকশনও না হয়। তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। দীনদার ডাক্তার হলে ভালো হয়। যেমন :
১২. সমকাম
আল্লাহ তাআলা একমাত্র শিরকের গুনাহ ছাড়া সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিতে পারেন। বান্দা যদি এক পৃথিবী সমান গুনাহ নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হয়, তবে আল্লাহও এক দুনিয়া সমান রহমত নিয়ে তার সামনে হাজির হবেন। আল্লাহর ক্রোধের উপর তাঁর রহমত বিজয়ী। আল্লাহ গুনাহ মাফ করার ক্ষেত্রে কারো পরোয়া করেন না। যতক্ষণ বান্দা তাওবা করে, মাফ চায়, নিরাশ না হয়, ততক্ষণ আল্লাহ তার গুনাহকে মাফ করেন। সুতরাং হতাশ হবেন না ভাই। ফিরে আসুন। চেষ্টা করুন। আবার চেষ্টা করুন। বিদেশে কাউন্সেলিঙের মাধ্যমে কনভার্সনের বহু নজীর আছে। আমাদের দীনই তো সবচেয়ে বড় কাউন্সেলিং।- সকল প্রাক্তন সঙ্গীর নাম্বার ডিলিট করুন
- ফোন নাম্বার চেঞ্জ করুন।
- ফেসবুক ডিএক্টিভ করুন। একাউন্ট ডিলিট করুন।
- মসজিদে দীনী সার্কেলে সময় বেশি দিন। দীনী কাজে ব্যস্ত থাকুন।
- কোনো পুরুষের প্রতি দুর্বলতা অনুভব হলে তার সংস্রব পরিহার করুন, তার থেকে নজরের হেফাজত করুন।
- পর্নো ও হস্তমৈথুন ছাড়তে যা যা আলোচনা হল, সেগুলো চর্চা করুন।
- কাউন্সেলিং-এর জন্য উপরে দুইজন সাইকিয়াট্রিস্টের নাম দেয়া হল। তাদের সাথে যোগাযোগ করুন। শাইখ উমায়ের- এর সোহবতে যান, তাঁর বাতানো পদ্ধতিতে আত্মনিয়ন্ত্রণ অর্জন করুন। গুনাহ ছাড়া কঠিন হতে পারে, কিন্তু অসম্ভব নয়।
- শারীরিক সমস্যাগুলোতে উপরের পরামর্শ অনুযায়ী আমল করুন।